,

হবিগঞ্জে বোরকা পরে বিদ্যালয়ে আসায় শাস্তি

স্টাফ রিপোর্টার : হবিগঞ্জ শহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ড্রেস পরিধান না করে বোরকা পরে স্কুলে আসায় শাস্তি পেলো ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া আক্তার। ছাত্রী সাদিয়া আক্তারকে ওই স্কুলের শিক্ষীকা মৌসুমী রায় পায়ে সেজদা দিয়ে নাকে খত দিতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সাদিয়া আক্তার শহরের মাহমুদাবাদ এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় ওই শিক্ষীকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন স্ট্যাটাস বা বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সাদিয়া আক্তার নামে ওই ছাত্রী স্কুলের ড্রেস না পরে বোরকা পরিধান করে স্কুলে যান। এসময় বিষয়টি শিক্ষিকা মৌসুমী রায়ের নজরে আসলে তিনি ওই ছাত্রীকে ড্রেস না পরে আসার কারণে শাস্তি প্রদান করেন। স্কুল ছাত্রীর দাবী, বোরকা পরে স্কুলে আসায় তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। পরে বিষয়টি ওই ছাত্রীর পরিবার থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়। গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনাটি ঘটলেও পরদিন শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধ হওয়ায় শনিবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন ওই স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ। আলোচনা শেষে তারা ওই শিক্ষিকাকে শোকজ করেন এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেয়া হয়। অভিযুক্ত শিক্ষিকা মৌসুমী রায় এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলেও জানা গেছে।
শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার জানান- স্কুল ড্রেস না এনে বোরকা পড়ে স্কুলে আসায় শিক্ষিকা মৌসুমি রায় উনার পায়ের কাছে সেজদা দিয়ে নাকে খত দিতে বলেন কিন্তু সাদিয়া শিক্ষিকা মৌসুমি রায়কে কেঁদে কেঁদে অন্য শান্তি দেওয়ার কথা বল্লেও তিনি ক্ষীপ্ত হয়ে বলেন আমি যা বলেছি তুমাকে তাই করতে হবে। এক পর্যায়ে সাদিয়াকে তা করতে বাধ্য করেন ওই শিক্ষিকা এবং অন্য শিক্ষার্থীদেরকে এব্যাপারে কোন রকম উস্কানি দিলে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।
এদিকে এ ঘটনায় গতকাল রবিবার পুরো জেলাজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় বইছে। নেটিজেনরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হলে ওই শিক্ষিকার অপসারন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছেন। আবার কেউ কেউ কর্মসূচিরও প্রস্ততি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। শিক্ষিকা মৌসুমী রায় ওই স্কুলের একজন খন্ডকালীন শিক্ষিকা বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে- বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান যে, ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আরো জানানো হয়- যেহেতু আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সেহেতু সংবেদনশীল এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন স্ট্যাটাস বা বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।


     এই বিভাগের আরো খবর